০৮:৩৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫

যে কারণে রোজা ভেঙে যায়

১. স্বামী-স্ত্রী মিলিত হলে রোজা নষ্ট হয়। রোজা ফরজ হওয়ার প্রথম দিকে রমজানের রাতেও এর অনুমতি ছিল না। পরে আল্লাহ তাআলা আয়াত নাজিল করে রাতে এর অনুমতি দেন। কোরআনে আছে, ‘রোজার রাত্রিতে তোমাদের জন্য স্ত্রী সহবাস বৈধ করা হয়েছে। তারা তোমাদের পোশাক আর তোমরা তাদের পোশাক। আল্লাহ জানতেন যে তোমরা আত্মপ্রতারণা করছ। তাই তো তিনি তোমাদের ওপর দয়া করেছেন ও তোমাদের অপরাধ ক্ষমা করেছেন। অতএব, এখন তোমরা তোমাদের স্ত্রীদের সঙ্গে সহবাস করতে পারো ও আল্লাহ তোমাদের জন্য যা বিধিবদ্ধ করেছেন, তা কামনা করো। আর তোমরা পানাহার করো, যতক্ষণ রাত্রির কৃষরেখা থেকে ঊষার শুভ্ররেখা স্পষ্টরূপে তোমাদের কাছে প্রতিভাত না হয়। তারপর রাত্রি পর্যন্ত রোজা পূর্ণ করো। আর যখন তোমরা মসজিদে ইতিকাফে (সংসার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে কিছুকালের জন্য ধ্যান) থাকো, তখন স্ত্রী সহবাস কোরো না। এ আল্লাহর সীমারেখা, সুতরাং এর ধারেকাছে যেয়ো না। এভাবে আল্লাহ মানুষের জন্য তাঁর আয়াত স্পষ্ট করে ব্যক্ত করেন, যাতে তারা সাবধান হয়ে চলতে পারে।’ (সুরা বাকারা, আয়াত: ১৮৭)

২. ইচ্ছাকৃতভাবে বমি করলে রোজা নষ্ট হবে। মহানবী (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তির অনিচ্ছাকৃতভাবে বমি এসে যায়, তাকে ওই রোজা কাজা করতে হবে না। কিন্তু যে ব্যক্তি স্বেচ্ছায় বমি করবে, তাকে সেই রোজা কাজা করতে হবে।’ (তিরমিজি: ৭২০

৩. মুখ দিয়ে কোনো কিছু পাকস্থলীতে পৌঁছালে তা পানাহার ধরা হবে। রোজার কথা মনে থাকা সত্ত্বেও পানাহার করলে রোজা ভঙ্গ হবে। কোরআনে আছে, ‘আর তোমরা পানাহার করো, যতক্ষণ রাত্রির কৃষরেখা থেকে ঊষার শুভ্ররেখা স্পষ্টরূপে তোমাদের কাছে প্রতিভাত না হয়। তারপর রাত্রি পর্যন্ত রোজা পূর্ণ করো।’ (সুরা বাকারা, আয়াত: ১৮৭) একইভাবে নাক দিয়ে কোনো কিছু পৌঁছানোও পানাহারের অন্তর্ভুক্ত। নবী (সা.) বলেছেন, ‘রোজাদার না হলে তুমি ভালোভাবে নাকে পানি দাও।’

যেসব ইনজেকশন পানাহারের বিকল্প নয়, বরং চিকিৎসার জন্য দেওয়া হয়; যেমন ইনসুলিন, পেনিসিলিন কিংবা শরীর চাঙা করার জন্য টিকা হিসেবে দেওয়া—এগুলো রোজা নষ্ট করবে না। এসব ইনজেকশন মাংসপেশিতে দেওয়া হোক কিংবা শিরাতে দেওয়া হোক।

তবে কোনো কারণে রক্তক্ষরণ হলে রোজা নষ্ট হবে না। কারণ, রক্তক্ষরণ ইচ্ছাকৃত নয়। একইভাবে দাঁত তোলা, ক্ষতস্থান ড্রেসিং করা কিংবা রক্ত পরীক্ষা করা—ইত্যাদির কারণে রোজা নষ্ট হবে না। কারণ, এগুলো শিঙা লাগানোর পর্যায়ভুক্ত নয়।

সংগৃহিত:প্রথম আলো

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

জনপ্রিয়

যে কারণে রোজা ভেঙে যায়

১২:৪৪:৩৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৪ মার্চ ২০২৫

১. স্বামী-স্ত্রী মিলিত হলে রোজা নষ্ট হয়। রোজা ফরজ হওয়ার প্রথম দিকে রমজানের রাতেও এর অনুমতি ছিল না। পরে আল্লাহ তাআলা আয়াত নাজিল করে রাতে এর অনুমতি দেন। কোরআনে আছে, ‘রোজার রাত্রিতে তোমাদের জন্য স্ত্রী সহবাস বৈধ করা হয়েছে। তারা তোমাদের পোশাক আর তোমরা তাদের পোশাক। আল্লাহ জানতেন যে তোমরা আত্মপ্রতারণা করছ। তাই তো তিনি তোমাদের ওপর দয়া করেছেন ও তোমাদের অপরাধ ক্ষমা করেছেন। অতএব, এখন তোমরা তোমাদের স্ত্রীদের সঙ্গে সহবাস করতে পারো ও আল্লাহ তোমাদের জন্য যা বিধিবদ্ধ করেছেন, তা কামনা করো। আর তোমরা পানাহার করো, যতক্ষণ রাত্রির কৃষরেখা থেকে ঊষার শুভ্ররেখা স্পষ্টরূপে তোমাদের কাছে প্রতিভাত না হয়। তারপর রাত্রি পর্যন্ত রোজা পূর্ণ করো। আর যখন তোমরা মসজিদে ইতিকাফে (সংসার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে কিছুকালের জন্য ধ্যান) থাকো, তখন স্ত্রী সহবাস কোরো না। এ আল্লাহর সীমারেখা, সুতরাং এর ধারেকাছে যেয়ো না। এভাবে আল্লাহ মানুষের জন্য তাঁর আয়াত স্পষ্ট করে ব্যক্ত করেন, যাতে তারা সাবধান হয়ে চলতে পারে।’ (সুরা বাকারা, আয়াত: ১৮৭)

২. ইচ্ছাকৃতভাবে বমি করলে রোজা নষ্ট হবে। মহানবী (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তির অনিচ্ছাকৃতভাবে বমি এসে যায়, তাকে ওই রোজা কাজা করতে হবে না। কিন্তু যে ব্যক্তি স্বেচ্ছায় বমি করবে, তাকে সেই রোজা কাজা করতে হবে।’ (তিরমিজি: ৭২০

৩. মুখ দিয়ে কোনো কিছু পাকস্থলীতে পৌঁছালে তা পানাহার ধরা হবে। রোজার কথা মনে থাকা সত্ত্বেও পানাহার করলে রোজা ভঙ্গ হবে। কোরআনে আছে, ‘আর তোমরা পানাহার করো, যতক্ষণ রাত্রির কৃষরেখা থেকে ঊষার শুভ্ররেখা স্পষ্টরূপে তোমাদের কাছে প্রতিভাত না হয়। তারপর রাত্রি পর্যন্ত রোজা পূর্ণ করো।’ (সুরা বাকারা, আয়াত: ১৮৭) একইভাবে নাক দিয়ে কোনো কিছু পৌঁছানোও পানাহারের অন্তর্ভুক্ত। নবী (সা.) বলেছেন, ‘রোজাদার না হলে তুমি ভালোভাবে নাকে পানি দাও।’

যেসব ইনজেকশন পানাহারের বিকল্প নয়, বরং চিকিৎসার জন্য দেওয়া হয়; যেমন ইনসুলিন, পেনিসিলিন কিংবা শরীর চাঙা করার জন্য টিকা হিসেবে দেওয়া—এগুলো রোজা নষ্ট করবে না। এসব ইনজেকশন মাংসপেশিতে দেওয়া হোক কিংবা শিরাতে দেওয়া হোক।

তবে কোনো কারণে রক্তক্ষরণ হলে রোজা নষ্ট হবে না। কারণ, রক্তক্ষরণ ইচ্ছাকৃত নয়। একইভাবে দাঁত তোলা, ক্ষতস্থান ড্রেসিং করা কিংবা রক্ত পরীক্ষা করা—ইত্যাদির কারণে রোজা নষ্ট হবে না। কারণ, এগুলো শিঙা লাগানোর পর্যায়ভুক্ত নয়।

সংগৃহিত:প্রথম আলো