এক সময়ের “মাছে-ভাতে বাঙালি” জাতি আজ দেশি মাছের স্বাদ থেকে অনেকাংশে বঞ্চিত। বাজারে দেশি মাছের প্রাচুর্য থাকলেও বর্তমানে দেশীয় প্রজাতির মাছ বিলুপ্তির মুখে।
কৃষিজমিতে মাত্রাতিরিক্ত কীটনাশক ও রাসায়নিক সার ব্যবহারে নদী, খাল-বিল, হাওড়-বাঁওড়ের মিঠা পানি দূষিত হয়ে পড়ছে। বিষাক্ত পানি এবং কারেন্ট জাল,চায়না জাল ব্যবহারে মা মাছ নিধন দেশীয় মাছের সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে কমিয়ে দিয়েছে। বিদেশি হাইব্রিড মাছের চাষও দেশীয় মাছের অস্তিত্ব হুমকির মুখে ফেলেছে।
গবেষণায় দেখা গেছে, বাংলাদেশে মোট ২৬০ প্রজাতির মিঠা পানির মাছের মধ্যে ১২টি চরম বিপন্ন এবং ১৪টি সংকটাপন্ন। বিশেষ করে খোলশা,কৈই, মাগুর, চাপিলা, শিং, পাবদা, কালবাউশ,চিতলসহ অর্ধশতাধিক প্রজাতির দেশি মাছ এখন আর তেমনটা চোখে পড়ে না।
প্রাকৃতিক ও মনুষ্যসৃষ্ট নানা কারণে মাছের আবাসস্থল ধ্বংস হচ্ছে। অপরিকল্পিত বাঁধ, জলাশয় ভরাট, রাসায়নিক বর্জ্য এবং প্রজনন মৌসুমে মাছ ধরা দেশি মাছের সংকটকে তীব্র করেছে।
দেশি মাছ সংরক্ষণে প্রয়োজন মাছের অভয়াশ্রম গড়ে তোলা, কারেন্ট জাল নিষিদ্ধকরণ, জলাশয় পুনর্গঠন, এবং সচেতনতা বৃদ্ধি। ধান খেতে মিনি পুকুর তৈরি এবং দেশি প্রজাতির মাছের মিশ্র চাষ এর কার্যকর সমাধান হতে পারে।
দেশি মাছের উৎপাদন বাড়াতে সরকারের গৃহীত উদ্যোগগুলো সফলভাবে বাস্তবায়িত হলে, মৎস্য খাত দেশের পুষ্টি ঘাটতি পূরণ এবং আর্থসামাজিক উন্নয়নে বড় ভূমিকা রাখতে পারবে।