অসুস্থতা, খাবারদাবারে অনিয়ম বা যেকোনো কারণে বমি হতে পারে। রোজা রেখে কেউ মুখ ভরে বমি করলে অনেকের ধারণা তার রোজা ভেঙে যাবে এবং রোজার কাজা করতে হবে।
আলেমদের মতে, তাদের এ ধারণা ঠিক নয়। অনিচ্ছাকৃত মুখ ভরে বমি হলে রোজা ভাঙবে না, কাজাও আদায় করতে হবে না। তবে কেউ যদি রোজা অবস্থায় ইচ্ছাকৃত মুখ ভরে বমি করে তাহলে তার রোজা ভেঙে যাবে এবং কাজা আদায় করতে হবে।
হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূল (সা.) বলেন-
مَنْ ذَرَعَهُ القَيْءُ، فَلَيْسَ عَلَيْهِ قَضَاءٌ، وَمَنْ اسْتَقَاءَ عَمْدًا فَلْيَقْضِ
যার অনিচ্ছাকৃত বমি হয়ে যায় তার কাজা আদায় করতে হবে না (অর্থাৎ তার রোজা ভাঙবে না)। আর যে ব্যক্তি ইচ্ছাকৃত বমি করে সে যেন কাজা আদায় করে (অর্থাৎ তার রোজা ভেঙে যাবে)। (জামে তিরমিজি, হাদিস : ৭২০)
রোজা ভঙ্গের কারণসমূহ—
১. মুখ ভরে বমি করা। ২. ইচ্ছা করে বমি করা। ৩. বমির বেশির ভাগ মুখে আসার পর তা গিলে ফেলা। ৪. মেয়েদের মাসিক ও সন্তান প্রসব। ৫. ইসলাম ত্যাগ করা। ৬. রোজাদারকে জোর করে কিছু খাওয়ানো। ৭. প্রস্রাব-পায়খানার রাস্তা দিয়ে ওষুধ বা অন্য কিছু শরীরে প্রবেশ করানো।
৮. গ্লুকোজ, শক্তিবর্ধক ইনজেকশন বা সেলাইন নেওয়া। ৯. ভুলবশত কোনো কিছু খেয়ে রোজা ভেঙে গেছে ভেবে আরও কিছু খাওয়া। ১০. ইফতারের সময় হয়েছে ভেবে সূর্যাস্তের আগে ইফতার করা।
১১. বৃষ্টির পানি মুখে পড়ার পর তা খেয়ে ফেলা। ১২. কান বা নাক দিয়ে ওষুধ প্রবেশ করানো। ১৩. দাঁতের ফাঁক থেকে ছোলা পরিমাণ কোনো কিছু বের করে খাওয়া। ১৪. রোজা স্মরণ থাকা অবস্থায় অজুতে কুলি বা নাকে পানি দেওয়ার সময় ভেতরে পানি চলেগেলে। (ফাতাওয়ায়ে শামি ও ফাতাওয়ায়ে আলমগিরি)।
১৫. রাত অবশিষ্ট আছে মনে করে সুবহে সাদিকের পর পানাহার করা। ১৬. হস্তমৈথুন বা অন্য কোনোভাবে বীর্যপাত করা ১৮. শিঙ্গা লাগানো কিংবা এ জাতীয় অন্য কোনো কারণে রক্ত বের হলে।
এই কারণগুলো ছাড়াও এমন কিছু কাজ আছে যা করলে রোজা ভঙ্গ হবে না; তবে রোজার পূর্ণ সওয়াব পাওয়া যাবে না, বরং রোজা মাকরুহ হয়ে যাবে। রোজার পূর্ণ সওয়াব অর্জন করতে অন্যান্য আমল ঠিক রাখার পাশাপাশি অশ্লীল কাজ, পাপাচার, সুদ-ঘুষ, হারাম পানাহার, অন্যের হক নষ্ট করা, ওজনে কম দেওয়া সহ সকল প্রকার পাপ কাজ থেকে নিজেকে বিরত রাখতে হবে।
সংগৃহিত:ঢাকা পোস্ট