০৯:৪৭ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫

‘বন্ধুত্ব চাইলে তাড়াতাড়ি তিস্তার পানি দেন’, ভারতকে মির্জা ফখরুল

বাংলাদেশের মানুষের বন্ধুত্ব চাইলে তাড়াতাড়ি তিস্তার পানির ন্যায্য হিস্যা দেওয়ার জন্য ভারতের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

প্রতিবেশী দেশের উদ্দেশে তিনি বলেন, “যদি বাংলাদেশের মানুষের সঙ্গে বন্ধুত্ব করতে চান তাহলে তাড়াতাড়ি তিস্তার পানি দেন। সীমান্তে গুলি করে মানুষ হত্যা বন্ধ করেন। আমরা ভারতকে বন্ধু হিসেবে দেখতে চাই, তবে সেই বন্ধুত্ব হবে পাওনা বুঝে নিয়ে সম্মানের সঙ্গে।”

এ সময় অন্তর্বর্তী সরকারকেও তিস্তার পানির ন্যায্য হিস্যার দাবিতে ভারতকে চাপ দেওয়ার কথা বলেন বিএনপি নেতা। বলেন, “আপনারা তো বলেন, আপনারা নিরপেক্ষ সরকার। এখানে আপনাদের মুখ খুলতে হবে। ভারতকে চাপ দিতে হবে। ভারতকে বলতে হবে, আমরা আমাদের পানি নায্য হিস্যা চাই।”

তিস্তা নদীর পানিবণ্টন চুক্তি ও মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের দাবিতে সোমবার দুপুরে লালমনিরহাটের তিস্তা রেলসেতু সংলগ্ন এলাকায় ‘তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলন’ এর ব্যানারে ৪৮ ঘণ্টার অবস্থান কর্মসূচির উদ্বোধনকালে মির্জা ফখরুল এসব কথা বলেন।

তিস্তা নদী নিয়ে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সমালোচনা করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, “বিগত সরকার যখন ক্ষমতায় ছিল মনে হচ্ছিল, এইবার বুঝি তিস্তা চুক্তি হবে। গত ১৫ বছর বাংলাদেশকে বেঁচে দিছে কিন্তু তিস্তার এক ফোঁটা পানিও তারা আনতে পারেনি।

“লড়াই না করে কিছু পাওয়া যায় না। লড়াই করেই আমাদের অধিকার আদায় করে নিতে হবে। তিস্তা নদীর পাড়ের মানুষদের আর দুঃখ যায় না। বহুদিন ধরে আমরা তিস্তার নায্য হিস্যার জন্য কথা বলে যাচ্ছি।”

তিনি বলেন, “শুধু তিস্তা নয়, বাংলাদেশের উজানে ৫৪টি নদীতে তারা (ভারত) বাঁধ দিয়েছে। এসব নদী থেকে তারা একতরফা পানি তুলে নিয়ে গিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন করে আর আমাদের দেশের মানুষ পানির অভাবে ফসল ফলাতে পারে না। জেলেরা মাছ ধরতে পারেন না।”

এ সময় মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে দ্রুত নির্বাচনের দাবি করেন।

বিএনপি নেতা বলেন, “অবিলম্বে নিরপেক্ষ নির্বাচন দিয়ে জনগণের হাতে ক্ষমতা ফিরিয়ে দিন। সরকার যদি জনগণের ভোটাধিকার ফিরিয়ে না দেয় তবে কঠোর আন্দোলনের মাধ্যমে তা আদায় করা হবে।”

তিনি বলেন, “আমরা ১৫ বছর ফ্যাসিবাদী হাসিনার বিরুদ্ধে লড়াই করেছি। আমাদের ছেলেদের ৩৬ দিনের সফল লড়াইয়ে হাসিনা ভারতে পালিয়েছে।”

‘তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলন’ এর প্রধান সমন্বয়ক ও বিএনপির রংপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ আসাদুল হাবিব দুলুর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য দেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামছুজ্জামান দুদু, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামান হায়দার।

একই কর্মসূচির অংশ হিসাবে লালমনিরহাট, নীলফামারী, রংপুর, কুড়িগ্রাম ও গাইবান্ধার ১১টি স্থানে সমাবেশ, পদযাত্রা ও সাংস্কৃতিক পরিবেশনা চলছে। নদীর পাড়ে তাঁবু স্থাপন করে আন্দোলনকারীরা রাত্রিযাপনেরও ব্যবস্থা করেছেন।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ভার্চুয়ালি আন্দোলনকারীদের উদ্দেশে বক্তব্য দেওয়ার কথা রয়েছে।

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

জনপ্রিয়

‘বন্ধুত্ব চাইলে তাড়াতাড়ি তিস্তার পানি দেন’, ভারতকে মির্জা ফখরুল

০৭:৪৫:৪৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

বাংলাদেশের মানুষের বন্ধুত্ব চাইলে তাড়াতাড়ি তিস্তার পানির ন্যায্য হিস্যা দেওয়ার জন্য ভারতের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

প্রতিবেশী দেশের উদ্দেশে তিনি বলেন, “যদি বাংলাদেশের মানুষের সঙ্গে বন্ধুত্ব করতে চান তাহলে তাড়াতাড়ি তিস্তার পানি দেন। সীমান্তে গুলি করে মানুষ হত্যা বন্ধ করেন। আমরা ভারতকে বন্ধু হিসেবে দেখতে চাই, তবে সেই বন্ধুত্ব হবে পাওনা বুঝে নিয়ে সম্মানের সঙ্গে।”

এ সময় অন্তর্বর্তী সরকারকেও তিস্তার পানির ন্যায্য হিস্যার দাবিতে ভারতকে চাপ দেওয়ার কথা বলেন বিএনপি নেতা। বলেন, “আপনারা তো বলেন, আপনারা নিরপেক্ষ সরকার। এখানে আপনাদের মুখ খুলতে হবে। ভারতকে চাপ দিতে হবে। ভারতকে বলতে হবে, আমরা আমাদের পানি নায্য হিস্যা চাই।”

তিস্তা নদীর পানিবণ্টন চুক্তি ও মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের দাবিতে সোমবার দুপুরে লালমনিরহাটের তিস্তা রেলসেতু সংলগ্ন এলাকায় ‘তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলন’ এর ব্যানারে ৪৮ ঘণ্টার অবস্থান কর্মসূচির উদ্বোধনকালে মির্জা ফখরুল এসব কথা বলেন।

তিস্তা নদী নিয়ে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সমালোচনা করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, “বিগত সরকার যখন ক্ষমতায় ছিল মনে হচ্ছিল, এইবার বুঝি তিস্তা চুক্তি হবে। গত ১৫ বছর বাংলাদেশকে বেঁচে দিছে কিন্তু তিস্তার এক ফোঁটা পানিও তারা আনতে পারেনি।

“লড়াই না করে কিছু পাওয়া যায় না। লড়াই করেই আমাদের অধিকার আদায় করে নিতে হবে। তিস্তা নদীর পাড়ের মানুষদের আর দুঃখ যায় না। বহুদিন ধরে আমরা তিস্তার নায্য হিস্যার জন্য কথা বলে যাচ্ছি।”

তিনি বলেন, “শুধু তিস্তা নয়, বাংলাদেশের উজানে ৫৪টি নদীতে তারা (ভারত) বাঁধ দিয়েছে। এসব নদী থেকে তারা একতরফা পানি তুলে নিয়ে গিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন করে আর আমাদের দেশের মানুষ পানির অভাবে ফসল ফলাতে পারে না। জেলেরা মাছ ধরতে পারেন না।”

এ সময় মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে দ্রুত নির্বাচনের দাবি করেন।

বিএনপি নেতা বলেন, “অবিলম্বে নিরপেক্ষ নির্বাচন দিয়ে জনগণের হাতে ক্ষমতা ফিরিয়ে দিন। সরকার যদি জনগণের ভোটাধিকার ফিরিয়ে না দেয় তবে কঠোর আন্দোলনের মাধ্যমে তা আদায় করা হবে।”

তিনি বলেন, “আমরা ১৫ বছর ফ্যাসিবাদী হাসিনার বিরুদ্ধে লড়াই করেছি। আমাদের ছেলেদের ৩৬ দিনের সফল লড়াইয়ে হাসিনা ভারতে পালিয়েছে।”

‘তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলন’ এর প্রধান সমন্বয়ক ও বিএনপির রংপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ আসাদুল হাবিব দুলুর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য দেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামছুজ্জামান দুদু, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামান হায়দার।

একই কর্মসূচির অংশ হিসাবে লালমনিরহাট, নীলফামারী, রংপুর, কুড়িগ্রাম ও গাইবান্ধার ১১টি স্থানে সমাবেশ, পদযাত্রা ও সাংস্কৃতিক পরিবেশনা চলছে। নদীর পাড়ে তাঁবু স্থাপন করে আন্দোলনকারীরা রাত্রিযাপনেরও ব্যবস্থা করেছেন।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ভার্চুয়ালি আন্দোলনকারীদের উদ্দেশে বক্তব্য দেওয়ার কথা রয়েছে।